Thursday, June 25, 2009

প্রথম পোর্টেবল বাংলা সফটওয়্যার: অভ্র

পোর্টেবল সফটওয়্যারঃ

সফটওয়্যার জগতে পোর্টেবিলিটি ধারা খুব নতুন নয়, এবং সম্প্রতি এর জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। সাধারণ সফটওয়্যার চালানোর আগে ইন্সটল করে নিতে হয়, এবং এই ইন্সটল/আনইন্সটলের ঝামেলায় উইন্ডোজে রেজিস্ট্রি করাপশন অথবা "ডি.এল.এল হেল" সমস্যায় পড়েননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। পোর্টেবল সফটওয়্যার এর বৈশিষ্ট্যই হল এগুলো চালাতে কোন ইন্সটলেশনের দরকার নেই, পেন ড্রাইভ বা আইপডের মত কোন রিমুভেবল স্টোরেজ থেকে এগুলো সরাসরি চলতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে নিয়ে গেলেও পোর্টেবল সফটওয়্যার এর সমস্ত সেটিং/পার্সোনালাইজেশন/প্লাগ-ইনস ইত্যাদি অটুট থাকে। এই ব্যস্ত যুগে অনেকেই বাসায় এক কম্পিউটার, বাইরে বের হলে ল্যাপটপ, অফিসে আরেক কম্পিউটার, সাইবার ক্যাফেতে অন্য কারো কম্পিউটার ব্যবহার করেন। নিজের প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সবখানে থাকবেই এমন নাও হতে পারে, মূলত এ ধরনের ক্ষেত্রেই পোর্টেবল সফটওয়্যার সবার প্রথম পছন্দ।


পোর্টেবল সফটওয়্যার এর বৈশিষ্ট্যঃ

মূলতঃ নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো থাকলে একটা সফটওয়্যার কে পোর্টেবল সফটওয়্যার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া যায়ঃ

১) কোন ইন্সটল/আনইন্সটলের প্রয়োজন হবে না। সরাসরি কপি/পেস্ট করে ব্যবহার করা যাবে, প্রয়োজন ফুরোলে সরাসরি ডিলিট করলেই আনইন্সটল হবে।

২) কম্পিউটারে লিমিটেড ইউজার অ্যাকসেস থেকেই ব্যবহার করা যাবে। কোন অ্যাডমিন বা পাওয়ার ইউজার অ্যাকসেস এর প্রয়োজন হবে না।

৩) সফটওয়্যার বন্ধ করার পর কম্পিউটারে কোন ট্রেস থাকবে না। অর্থাৎ ফাইল সিস্টেম, উইন্ডোজ রেজিস্ট্রি ইত্যাদি অপরিবর্তিত থাকবে।

৪) সফটওয়্যার এর সমস্ত সেটিং/পার্সোনালাইজেশন সফটওয়্যার ফোল্ডারের ভিতর সংরক্ষিত থাকবে। সম্পূর্ণ ফোল্ডার সহ সফটওয়্যারটি অন্য কোন কম্পিউটারে নিয়ে গেলেও আগের সেটিং কাজ করবে।

৫) সফটওয়্যার এর প্লাটফর্ম ডিপেনডেনসি ঠিক থাকলে যে কোন কম্পিটারেই কাজ করতে সক্ষম হবে। অর্থাৎ উইন্ডোজ ২০০০ এর জন্য বানানো পোর্টেবল সফটওয়্যার যেকোন কম্পিউটারে উইন্ডোজ ২০০০ থাকলেই কাজ করবে, অন্য কোন সফটওয়্যার এর উপর এটা নির্ভর করবে না।

৬) সরাসরি সিডি/ডিভিডি/পেন ড্রাইভ/ফ্লপি ইত্যাদি রিমুভেবল মিডিয়া থেকে চলতে সক্ষম হবে। এই কারণে পোর্টেবল সফটওয়্যারগুলোর সাইজে সাধারণত অপেক্ষাকৃত ছোট হয়।

সবগুলো বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে পোর্টেবল সফটওয়্যার বানানো সহজ কাজ নয়, বিশেষ করে উইন্ডোজ এনভায়রনমেন্টে। এজন্যই দেখা যায়, ম্যাক এর জন্য শত শত পোর্টেবল সফটওয়্যার থাকলেও উইন্ডোজে এদের সংখ্যা হাতে গোনা।

অভ্র কীবোর্ড পোর্টেবল এডিশনঃ

উইন্ডোজ ২০০০ থেকে উইন্ডোজে ইউনিকোডের সাপোর্ট থাকলেও বাংলা লেখার কোন উপায় ছিল না। ২০০৩ সালে উইন্ডোজে ইউনিকোড ভিত্তিক বাংলা লেখার জন্য প্রথম যে সফটওয়্যারটি আবির্ভূত হয় সেটি অভ্র কীবোর্ড। এই ২০০৭ সালেও তেমনি পোর্টেবল সফটওয়্যার এর সমস্ত বৈশিষ্ট্য নিয়ে আসল অভ্র কীবোর্ড পোর্টেবল এডিশন। কোন বাংলা সফটওয়্যার এর মধ্যে পোর্টেবিলিটি এটাই প্রথম।

পোর্টেবল সফটওয়্যার এর সমস্ত বৈশিষ্ট্য মেনেই অভ্র কীবোর্ড পোর্টেবল এডিশনটি তৈরী করা হয়েছে। এতে অভ্র কীবোর্ড স্ট্যান্ডার্ড এডিশনের সমস্ত সুবিধাই আছে, উপরন্তু বোনাস হিসেবে আছে "ভার্চুয়াল বাংলা ফন্ট ইন্সটলার"। এই "ভার্চুয়াল বাংলা ফন্ট ইন্সটলার" এর মাধ্যমে অভ্র কীবোর্ড যতক্ষণ চলবে, ততক্ষণ ব্যবহারকারী লেখার জন্য "সিয়াম রুপালি" নামে একটা বাংলা ফন্ট ইন্সটলড দেখতে পাবেন। অ্যাডমিন অ্যাক্সেস ছাড়া যেখানে উইন্ডোজে কোন ফন্ট ইন্সটল করা যায় না, সেখানেও এই "ভার্চুয়াল বাংলা ফন্ট ইন্সটলার" কাজ করে।

মূলত যারা ভার্সিটির ল্যাব কম্পিটার/সাইবার ক্যাফের কম্পিউটার/অফিস কম্পিউটার ব্যবহার করেন (যেখানে সাধারণত অ্যাডমিন অ্যাক্সেস না থাকার জন্য কোন সফটওয়্যার ইন্সটল করা যায় না), তাদের জন্যই এই পোর্টেবল অভ্র কীবোর্ড রিলিজ করা হয়েছে। একাধিক কম্পিউটার ব্যবহার করেন যারা তারাও এর সুবিধা নিতে পারবেন। স্ট্যান্ডার্ড এডিশনের থেকে এটি সাইজেও অনেক ছোট।

লাইসেন্সঃ

অভ্র কীবোর্ড পোর্টেবল এডিশনটিও ফ্রি। ব্যক্তিগত অথবা কমার্শিয়াল যেকোন বাংলা লেখার কাজে এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে।

ডাউনলোডঃ

অভ্র কীবোর্ড পোর্টেবল এডিশন নিচের লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করা যাবেঃ

http://www.omicronlab.com/portable-avro-keyboard.html